Assertion For Justice, Equality And Freedom.

Wednesday, March 26, 2014

ডায়াবেটিস যখন অনিয়ন্ত্রিত

ডায়াবেটিসের জটিলতা নানাবিধ। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ধীরে ধীরে কিডনি, হূদ্যন্ত্র, চোখ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি করে ও অকার্যকর করে দেয়। তবে হঠাৎ করে রক্তে শর্করা অনেক বেশি বেড়ে গেলে মারাত্মক জীবনাশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এর একটি হলো ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস। সাধারণত টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশু-কিশোরদেরই এটি বেশি হয়। কেননা, তাদের দেহে ইনসুলিন হরমোন প্রায় থাকে না বললেই চলে।


ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিসে তিনটি মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে: 
১। হাইপারগ্লাইসেমিয়া: রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়
২। চর্বি ভেঙে রক্তে কিটোন নামের অম্ল তৈরি হতে থাকে 
৩। মেটাবলিক এসিডোসিস: ক্রমে এই কিটোন দেহে জমে গিয়ে রক্তের অম্লত্ব অস্বাভাবিক বেড়ে যায় এবং বাইকার্বোনেট কমে যায়।

কীভাবে বুঝবেন: কিটোএসিডোসিস একটি আকস্মিক জরুরি অবস্থা। কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিনের মধ্যে কিছু উপসর্গ দ্রুত বেড়ে গিয়ে এতে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ও কোমায় আক্রান্ত হয়। উপসর্গগুলো হলোঃ 
১। প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
২। প্রচণ্ড তৃষ্ণা জোরে জোরে শ্বাস এবং শ্বাসে এসিটোনের গন্ধ 
৩। বমি
৪। চোখে ঝাপসা দেখা
৫। পেটে ব্যথা 
৬। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
৭।  জ্ঞান হারিয়ে ফেলা

কেন হয়: আকস্মিকভাবে রক্তে শর্করা অনেক বেশি বেড়ে যাওয়াই এই অবস্থার কারণ। এমনটা হতে পারে যদি কেউ কয়েক দিন ইনসুলিন না নেয়, না বুঝে ইনসুলিনের ডোজ বেশি কমিয়ে দেয়, সঠিকভাবে ইনসুলিন না দেয়, জ্বর বা সংক্রমণের কারণে রক্তে শর্করা বেড়ে যায়, ডায়াবেটিক রোগীর অস্ত্রোপচার বা গর্ভাবস্থা বা প্রসবের সময় ঠিকমতো চিকিৎসা না হলে। ছোটদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস প্রথমবারের মতো এই সমস্যা নিয়ে ধরা পড়তে পারে।

চিকিৎসা
ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস একটি জরুরি অবস্থা এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হলে মৃত্যু অবধারিত। যত দ্রুত সম্ভব এ ধরনের রোগীকে বিশেষায়িত হাসপাতালে নিতে হবে। এই সমস্যায় দেহ প্রচণ্ড রকমের পানিশূন্য হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত শিরায় স্যালাইনের মাধ্যমে পানিশূন্যতা পূরণ করতে হবে। হাসপাতালে শিরায় বিশেষ পদ্ধতিতে ইনসুলিন দিয়ে এর চিকিৎসা করা হয়।

প্রতিরোধ
যারা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে বা টাইপ-১ ডায়াবেটিসের রোগী, তারা কোনো অবস্থাতেই একদিনের জন্যও ইনসুলিন নেওয়া বন্ধ করবেন না। সাধারণ জ্বর বা রোগে হঠাৎ করে ইনসুলিনের ডোজ কমাবেন না। অনিয়ন্ত্রিত শর্করার লক্ষণ যেমন ঘন ঘন পিপাসা বা ঘন ঘন প্রস্রাব ইত্যাদি বোধ করলে দ্রুত শর্করা মাপুন ও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। শৃঙ্খলা ও নিয়মকানুন মেনে চললে এ ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

-অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ 
ডিন, মেডিসিন অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।





তথ্যসুত্রঃ প্রথম আলো, বংলাদেশ

 
Our Another Site : Right Way BD | Right Way BD FB Group | Right Way BD FB Page |