Assertion For Justice, Equality And Freedom.

Wednesday, October 1, 2014

নারীর বিরুদ্ধে জিঘাংসা, ঠেকাতে প্রয়োজন সচেতন শিক্ষা ব্যাবস্থা

প্রতিদিন প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমের কোন না কোন অংশ জুড়ে নারী নির্যাতনের যে ঘটনা গুলি দেখা যায়, তা থেকে এটুকু প্রতীয়মান হয়; ঘটনাগুলি ঘটতেই থাকবে,  আর দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের আনাচে কানাচে কিশোরী থেকে শুরু করে প্রত্যেক বয়সের নারীরা কোন না কোনভাবে নির্যাতনের শিকার হতেই থাকবে। আর দেশের সচেতন নাগরিকেরা নানাভাবে তাদের প্রতিবাদ ব্যক্ত করতে থাকবেন। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গুলি নারী নির্যাতন বিষয়ে বিভিন্ন রকমের গুরুত্তপুর্ন কার্যাবলী সম্পাদন করছেন, যেগুলি প্রশংসার দাবীদার।

 বাস্তব চিত্র কি বলে? নারী নির্যাতন কি প্রকৃত অর্থে কমছে? মোটেই তা নয়। মোবাইল, ইন্টারনেটের এই ভয়াল যুগে যেখানে খুব সহজেই প্রাপ্ত যৌনতার নোংরা ছবি দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তরুন সমাজকে নানাভাবে আকর্ষিত করছে ও তাদের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটাচ্ছে, সেখানে আবেগ-বিবেক, প্রকৃত ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং জবাবদিহিতা ইত্যাদি বিষয়গুলিত দিন দিন যেন বিলুপ্তির পথেই পা বাড়াচ্ছে। তাই শয়তানি শক্তির প্রভাবে নারী নির্যাতন আগের চাইতে আরও ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করছে। নারীরা কোথাও নিরাপদ নয়। তরুন সমাজের কাছে নারী মানেই যৌণ চাহিদা মেটানোর ভোগ্যপন্য, আইটেম, শরীরের গঠন ও আকৃতি, অপবাদিণী, কলংকিনী এবং আরো ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই আজকালকের যুগের কিশোর-তরুনেরা স্থান-কাল-বয়স চোখে দেখেনা আর বিবেচনাও করেনা। পুরুষের বয়স পঞ্চাশ হলেই কি আর নারীর বয়স বারো হলেও সমস্যা নেই। অথচ বারো বছরের একটা কিশোরী মেয়ে জীবন সম্পর্কে কি ই বা শিক্ষা লাভ করেছে?

এভাবে আর চলতে দেয়া যায়না। ধর্ষনের মতো জঘন্য পাপাচারগুলি সংঘটিত হবার পর সংবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলি ধর্ষিতার বিচার ও ক্ষতিপুরনের জন্য নানা রকমের প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। কিন্তু ঘটনা ঘটার পুর্বেই তার প্রতিকার মুলক ব্যবস্থা নেয়া উত্তম, যাতে করে এই সমস্ত ঘটনা ঘটার সুযোগই না হয়। এইজন্য যেই পদক্ষেপগুলি বেশি করে নেয়া প্রয়োজন, সেগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্তপুর্ন পদক্ষেপ হলো, তরুন সমাজের ভিতরে সমাজিক ভাবে সচেতনতা তৈরীর জন্য যত রকমের ব্যবস্থা নেয়া যায়, সব রকমের কার্যক্রম গ্রহন করা।

গ্রামে-গঞ্জে বসবাস করা দরিদ্র ঘরের অশিক্ষিত অথবা অর্ধশিক্ষিত একটি ছেলে যেমনি করে জীবনের প্রকৃত শিক্ষা থেকে দূরে বাস করে, তেমনি করে শহরে থাকা তথাকথিত আধুনিক বাবা-মায়েরা তাদের আদরের ছেলেকে জীবনের সমস্ত চাহিদাগুলি মেটানোর সাথে সাথে সত্ত্যিকারের প্রকৃত শিক্ষা দিতে পারছেন কি না, আজকের এই অস্থির-যান্ত্রিক যুগে এই কথাটিও প্রশ্নবিদ্ধ। নারীরা এখন আর ঘরে বসে থাকতে পারেননা। জীবনের তাগিদে তাকেও পুরুষের মতো ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করতে হয়। কারন ঘুরে ফিরে সেইটাই, পুরুষের উপর তারা পুরোপুরি ভাবে ভরসা করতে পারছেননা। এই দিকে তাদের সন্তান একা একা ঘরে বসে কি করছে, তার খবর রাখার সময় কোথায় তাদের? এখন গোড়ায় হাত দিলেই তো সমস্যা। নারী-পুরুষেরা কেন একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারছেননা!? মুল্যবোধ ও জবাবদিহীতার অভাব কেন এবং কোথায়? 

সবশেষে এটুকুই বলতে হয়, শিকড় থেকে সত্যিকারের আধুনিক ও সচেতন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ খোলা নেই। তাই দেশের প্রতিটি অঞ্চলের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি নতুন নতুন পর্যায়ের আধুনিক মানের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিশোর-তরুন কমিউনিটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন, যেখানে কিশোর ও তরুন সমােজের ছেলে-মেয়েরা প্রকৃত অর্থে মানুষের প্রতি মানুষের মূল্যবোধ তথা নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, জবাবদিহীতা এবং নিজের জীবনের সম্মান ও প্রয়োজন রক্ষা করে চলতে পারবে। কারন, অপরাধ যখন সংঘটিত হয়, তখন এক পক্ষ সাথে সাথেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর অপর পক্ষ হয় তার কিছু সময় পরে, যখন সে ধরা পরে যায়। পরবর্তী অপরাধ সংঘটির হবার আগেই দেশ ও মানুষের কল্যানে এখনই প্রয়োজন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করার।

নীচে আমাদের পুরনো আমলের ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থার ছোট একটি চিত্র তুলে ধরা হলো, যা দেখলে দুঃখই হয়ঃ 

ধর্ষণের শাস্তি দুই লাখ টাকা জরিমানা !
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সালিসের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওই টাকা দেওয়ার জন্য ১৫ দিনের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি জানলেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। গত রোববার ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। মেয়েটির পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার সকালে ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল। পথে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ধোপাদহ গ্রামের বাসিন্দা নাফিস খান (২২) মেয়েটিকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পাশের বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি স্থানীয় কয়েকজন দেখে নাফিসকে আটক করেন। পরে তাঁকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য দেলোয়ার হোসেনের জিম্মায় দেওয়া হয়।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, নাফিস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। ওই রাতেই ধোপাদহ গ্রামে নাফিসের চাচা লুৎফর রহমানের বাড়িতে সালিস হয়। সেখানে নাফিসকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ওই সালিসে কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। মতিয়ার রহমান বলেন, জরিমানার টাকা ১৫ দিনের মধ্যে মেয়েপক্ষকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেয়ের দিনমজুর বাবা বলেন, ‘টাকা এখনো পাইনি। আদৌ পাব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সালিসকে সম্মান করে থানায় অভিযোগ করিনি।’ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুভাষ বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনাটি জানি। তবে কেউ অভিযোগ দেয়নি বলে খোঁজখবর নিইনি। ধর্ষণের ঘটনায় মামলা ছাড়া বিচার করা যায় না।’

Maksuda
Date: 01-10-2014.


তথ্যসুত্রঃ প্রথম আলো, বাংলাদেশ

Tuesday, August 26, 2014

আত্মহত্যার ভয়ংকর পরিণতি

ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ ও অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ হওয়া সত্ত্বেও এমন অনেক লোক আছে, যারা জীবনযাপনের কঠিন দুঃখ-দুর্দশা ও ব্যর্থতার গ্লানি থেকে পরিত্রাণের জন্য অথবা জেদের বশবর্তী হয়ে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। কিন্তু ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর ওপর ভরসা ও দৃঢ় আস্থা থাকলে কারও আত্মহত্যার মতো ক্লেশকর পথে পা বাড়াতে হয় না। আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকতে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন এবং আত্মহত্যার পরিণামে কঠোর শাস্তির বর্ণনা দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা নিজেদের হত্যা কোরো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু এবং যে কেউ সীমা লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা) করবে, তাকে অগ্নিতে দগ্ধ করব; এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৯-৩০)

অথচ আজকাল আত্মহত্যার ঘটনা প্রায়ই সংঘটিত হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এমন প্রবণতা বেশি। বখাটেদের উৎপাতের কারণে কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে, আবার মা-বাবার সামান্য বকুনির কারণেও আত্মহননের মতো ঘটনা ঘটছে। পারিবারিক বিপর্যয়, মানসিক অশান্তি, সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা, মূল্যবোধের অবক্ষয় ইত্যাদি বিষয়ের সঙ্গেও জড়িত আছে আত্মহত্যার মতো ধ্বংসাত্মক ঘটনা। এসব আত্মহত্যার পেছনে কাজ করে প্রচণ্ড মনস্তাত্ত্বিক চাপ। ফলে ভারসাম্য হারিয়ে তা সহ্য করতে না পেরেই আত্মহননের মধ্য দিয়ে দুর্বল চিত্তের ব্যক্তিরা মুক্তি খোঁজে। আত্মহত্যার ভয়ানক পরিণতি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ওইভাবে লাফিয়ে পড়ে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে। যে ব্যক্তি বিষ পান করে আত্মহত্যা করে, সে-ও জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ওইভাবে নিজ হাতে বিষ পান করতে থাকবে। আর যেকোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করে, তার কাছে জাহান্নামে সেই ধারালো অস্ত্র থাকবে, যা দ্বারা সে সর্বদা নিজের পেট ফুঁড়তে থাকবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

ইসলামি বিধানে আত্মহত্যা নাজায়েজ; এর প্রতিফল চিরস্থায়ী জাহান্নাম। যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করে, সে শুধু তার নিজের ওপরই জুলুম করে না বরং এতে মা-বাবা, ভাইবোনসহ আত্মীয়-পরিজন সবাই খুব কষ্ট পায় এবং অত্যন্ত বিচলিতবোধ করে। যে পরিস্থিতিতেই হোক না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে এ এক বিরাট অন্যায়। কারণ, এর দ্বারা আল্লাহর বেঁধে দেওয়া নিয়মের বরখেলাপ হয়ে যায়। তাই এমন কুচিন্তা থেকে সতর্ক থাকা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। নবী করিম (সা.) আত্মহত্যার শাস্তি ঘোষণা করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যেই জিনিস দ্বারা আত্মহত্যা করে, কেয়ামতের দিন তাকে সেই জিনিস দ্বারাই শাস্তি দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে, সে দোজখে অনুরূপভাবে নিজ হাতে ফাঁসির শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। আর যে বর্শা ইত্যাদির আঘাত দ্বারা আত্মহত্যা করে, সে দোজখেও সেভাবে নিজেকে শাস্তি দেবে।’ (নাসাঈ, তিরমিজি)

আত্মহত্যার উল্লেখযোগ্য কারণ স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া-বিবাদ, মা-বাবা ও ছেলেমেয়ের মনোমালিন্য, পরীক্ষায় ব্যর্থতা, দীর্ঘস্থায়ী রোগযন্ত্রণা থেকে নিষ্কৃতি, প্রেমে বিরহ, ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি ও ব্যর্থতা, শত্রুর কাছে ধরা না দেওয়া প্রভৃতি। যখন কারও জ্ঞান-বুদ্ধি, বিবেক ও উপলব্ধি-অনুধাবন শক্তি লোপ পায়, নিজেকে অসহায়-ভরসাহীন মনে হয়, তখনই ধর্ম-কর্ম ভুলে মানুষ আত্মহত্যা করে বসে। জাগতিক দুঃখ-কষ্ট, লাঞ্ছনা ও অপমান থেকে আত্মরক্ষা করার ইচ্ছায় মানুষ আত্মহননের মাধ্যমে চিরন্তন কষ্ট ও লাঞ্ছনার দিকে চলে যায়। আত্মহত্যার প্রতিফল সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের এক ব্যক্তি আহত হয়ে সে ব্যথা সহ্য করতে পারেনি। সে একটি ছুরি দিয়ে নিজের হাত নিজেই কেটে ফেলে। এরপর রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। এ ব্যক্তি সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দা নিজেকে হত্যা করার ব্যাপারে বড় তাড়াহুড়া করে ফেলেছে। আমি তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিলাম।’ (বুখারি ও মুসলিম)

আত্মহত্যা একটি ভয়ংকর সামাজিক ব্যাধি। মাঝেমধ্যেই পত্রিকার পাতায় আত্মহত্যার সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখা যায়। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে হতাশ নারী-পুরুষ বেছে নেয় আত্মহননের দুর্ভাগ্যজনক পথ। ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ জেনেশুনেও যাদের পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষমতা দুর্বল, তারাই ধ্বংসাত্মক ও মর্মান্তিক ভ্রান্ত পথে পা বাড়ায়। তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস নয়, সৃষ্টির পথে এগিয়ে যেতে হবে। অথচ বাস্তবে দেখা যায়, অনেক উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিজীবী, শিল্পপতি, ব্যবসায়ীও এমন দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত নন। শিক্ষিত ও অশিক্ষিত ছাড়াও আত্মহত্যা যেমন যুবক ও প্রৌঢ়দের মধ্যে দেখা যায়, তেমনি তা নারী-পুরুষের মধ্যেও পরিলক্ষিত হয়। যদিও আত্মহত্যা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা ঘোষিত হয়েছে, ‘তোমরা নিজের হাতে নিজেদের জীবনকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ কোরো না।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৯৫)

যখন নিজেকে অসহায় ও আশাহত মনে হয় এবং আত্মহত্যার কুচিন্তা মনে আসে, তখন মনে করতে হবে এখন কুমন্ত্রণাদাতা শয়তানের দুরভিসন্ধি এসেছে। তাই এসব মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে অবশ্যই দূরে থাকা বাঞ্ছনীয়। বিপদে ধৈর্যধারণে অবিচল থেকে আল্লাহর ওপর নির্ভর করার প্রেরণা তিনিই মানুষকে দান করেছেন। কখনো আত্মহত্যার কথা মনে এলে ফেতনা থেকে নিজকে রক্ষাকল্পে নামাজের মাধ্যমে বিনীতভাবে আল্লাহর দয়া ও সাহায্য কামনা করা উচিত। মুসলিম পরিবার ও সমাজজীবনে আত্মহত্যার মতো মহাপাপ থেকে সর্বস্তরের নর-নারী ও সন্তানসন্ততির বেঁচে থাকার জন্য ইসলামের বিধিবিধান ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলাই সর্বোত্তম পন্থা।

 


ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক, গবেষক ও কলাম লেখক।
তথ্যসুত্রঃ প্রথম আলো, বাংলাদেশ। 

Monday, August 25, 2014

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালিত

চট্টগ্রামে নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল সমাবেশ, আলোচনা সভা ও মিছিল। নারী যোগাযোগ কেন্দ্র ও উৎস যৌথভাবে গতকাল রোববার এসব কর্মসূচির আয়োজন করে। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, নারীরা ঘরে-বাইরে ভিন্ন মাত্রায় ভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনের এই মাত্রা এখনো কমেনি; বরং অনেক ক্ষেত্রে বেড়েছে। এই নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।  অনুষ্ঠানে বক্তারা নারী নির্যাতন ও সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ এবং দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ রওশন আক্তার হানিফ, জাতীয় মহিলা পরিষদের সভাপ্রধান লতিফা কবির, নারী ও শিশু অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের সহকারী উপপরিচালক হোসনে আরা, এস আর কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান জেলি চৌধুরী, উৎসের নির্বাহী সদস্য আহমদ কবির প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আরজু শাহাবুদ্দিন।


আলোচনা সভা শেষে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।  এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় নগরের ডিসি হিল থেকে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন শিক্ষাবিদ রওশন আক্তার হানিফ। শোভাযাত্রাটি নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।



তথ্যসুত্রঃ প্রথম আলো, বাংলাদশ।

Tuesday, August 12, 2014

কুষ্টিয়ায় দুই কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় দুই কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট দৌলতপুরের হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নে এক কিশোরী (১৫) ধর্ষণের শিকার হয়। পরদিন ওই কিশোরী থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। পুলিশ অভিযোগ নথিভুক্ত না করে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার পরামর্শ দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে গত রোববার প্রথম আলোয় ‘ধর্ষণের ঘটনায় মামলা না নিয়ে মীমাংসার পরামর্শ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবর রহমান উৎকোচ নিয়ে বিষয়টি মীমাংসার পাঁয়তারা করেন।

জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, রোববার সন্ধ্যায় প্রথম আলোয় সংবাদটি দেখার পর তিনি তাৎক্ষণিক দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সরেজমিনে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। ইউএনও শামীমুল হক পাভেল রাতেই মেয়েটির বাড়িতে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে হাজির হন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ইউপি সদস্য মজিবর রহমান, ধর্ষণে অভিযুক্ত জুয়েল ও তাঁর বাবা মারু মালিথাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

দৌলতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবাইদুর রহমান বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে ওই কিশোরীর করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনকে গতকাল সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ভান্ডারিয়া থানার পুলিশ জানায়, রোববার দুপুরে উপজেলার ইকড়ী ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী কিশোরীর (১২) বাবা ও মা বাড়িতে ছিলেন না। এ সময় আতরখালী গ্রামের মো. সুজন (৩৫) মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। মেয়েটির চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সুজন পালিয়ে যান। মেয়েটিকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভান্ডারিয়া থানার এসআই আবদুল হক বলেন, ছেলেকে পালাতে সহযোগিতা করায় সুজনের বাবা দেলোয়ার হোসেনকে রোববার বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।



তথ্যসুত্রঃ প্রথম আলো, বাংলাদেশ।

Wednesday, July 23, 2014

দুবাইয়ে যৌনদাসত্বের শিকার পাকিস্তানি নারীরা

একসময় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল ১৬ বছর বয়সী পাকিস্তানি কিশোরী জুনেরার। তার সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। অর্থের অভাবে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে সে। দুবাইয়ে পাচার করে যৌনকর্মী হিসেবে তাকে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। সেই থেকে তার জীবনে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার। সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রতিবছর পাকিস্তান থেকে কয়েক শ নারী দুবাইয়ে পাচার হন। সেখানে তাঁরা যৌনদাস হিসেব কাজ করতে বাধ্য হন। ছদ্মনামের জুনেরা ও তার বোন শায়েস্তাও একই পরিণতির শিকার।

জুনেরার পরিবারের বাস পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে। পরিবারটির অর্থসংকটের সুযোগ নেন আয়েশা নামের এক প্রতিবেশী নারী। দুই বোনকে গৃহস্থালি কাজের প্রস্তাব দিয়ে একপর্যায়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তাদের দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। বিউটি পারলারে কাজ দেবে বলে নিয়ে যান আয়েশা। সেখানে যাওয়ার পরে আসল বিপদের মুখে পড়ে দুই বোন। যৌনকর্মী হিসেবে তাদের কাজ করতে বলা হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে বা অস্বীকৃতি জানালে তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন ও নানা হুমকি। অবশেষ তারা এ কাজ করতে বাধ্য হয়।

২০১৩ সালে দুই বোন পাচারকারীদের খপ্পর থেকে পালাতে সক্ষম হয়। পুরো ঘটনাটি পরিবারকে জানায়। বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পরে পাচারকারীরা তাদের বাড়িতে এসে হামলা চালায়। এতে জুনেরা আহত হয়। পাচারের অভিযোগে আয়েশা ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে জুনেরার পরিবার মামলা করেছে। অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। কিন্তু মামলা আর এগোয় না। বরং মামলা করে ভুক্তভোগীরাই আছে বিপদে।

জুনেরা ও শায়েস্তা পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাদের দুর্দশা কাটেনি। পাচারকারীদের ভয়ে তাদের লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে। যৌনদাসত্ব থেকে আক্ষরিক অর্থে দুই বোনের মুক্তি মিললেও দুষ্টচক্র তাদের পিছু ছাড়ছে না। পাচারকারীরা শক্তিশালী। তাই আইন তাদের টিকিটিও ছুঁতে পারছে না। বরং জুনেরা ও শায়েস্তাদের দুর্ভোগ দীর্ঘায়িত হয়।




তথ্যসুত্রঃ প্রথম আলো, বাংলাদেশ

 
Our Another Site : Right Way BD | Right Way BD FB Group | Right Way BD FB Page |