সম্মেলন থেকে বিশেষ কোনো ঘোষণা আসেনি। আয়োজকদের দাবি, দক্ষিণ এশিয়ায় নারীর
প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে এই দল কীভাবে কাজ করবে এবং কে কীভাবে সহায়তা
করবেন, তার উপায় খুঁজে বের করতেই অংশগ্রহণকারীরা প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা
করেছেন। এর মাধ্যমে বর্তমান নীতি, আঞ্চলিক সংলাপ ও সহযোগিতার বিষয়গুলো উঠে
এসেছে। বিশ্বব্যাংক ও অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় আয়োজিত দুই দিনের ওই
সম্মেলনে মোট ছয়টি সেশনে ৪০ জন বক্তব্য দেন। গত সোমবার সম্মেলনে বক্তৃতা
করেন নেপালের শিক্ষামন্ত্রী মধাব পাওডেল, বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট
ইসাবেল গুয়েরো, ভারতের অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল কার্যালয়ের প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা নিশা আগারওয়াল প্রমুখ। মধাব পাওডেল বলেন, এত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হচ্ছে
না, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ অবস্থা থেকে
উত্তরণে সম্মেলনে যেসব সুপারিশ আসবে, তা কাজে লাগিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা
বন্ধে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্বব্যাকের ভাইস প্রেসিডেন্ট গুয়েরো বলেন, সহিংসতা বন্ধে দক্ষিণ এশিয়ার
প্রত্যেক নারীকে নীরবতা ভেঙে বের হয়ে আসতে হবে, মুখ বুজে নির্যাতন সহ্য করা
চলবে না। অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের সিইও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সবার যৌথ
উদ্যোগে কাজ করার পাশাপাশি পিতৃতান্ত্রিক মনোভাব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সম্মেলনে কয়েকজন বক্তা বলেন, পাকিস্তানে ন্যায়পাল নিয়োগ দেওয়ার কারণে নারীর
প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানি অনেক কমেছে। বিষয়টি দৃষ্টান্ত হতে পারে বলেও
মনে করেন তাঁরা। বেসরকারি সংস্থাগুলোর তীব্র সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, এসব সংস্থা কোনো
ঘটনা ঘটলেই শুধু তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এনজিওগুলোকে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর
করতে কাজ করার আহ্বান জানান কয়েকজন বক্তা। তাঁরা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায়
সম্পত্তি বণ্টনের সময় নারী তাঁর প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ
করে দরিদ্র নারী বিষয়টি বোঝেন না বা প্রতিবাদও করেন না। নীতিনির্ধারণী
পর্যায়ে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের এসব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা পালন করতে
হবে।
সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে যোগ দেওয়া তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের
সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারী আরও এক ধাপ
এগিয়ে যেতে পারেন। বিশেষ করে নারীর আর্থিক ক্ষমতায়নে এটি বিশেষ ভূমিকা
রাখবে। এ জন্য বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি। বাংলাদেশ থেকে সাংসদ শাহীন মনোয়ারা হক, অধিকারকর্মী শিরিন হকসহ কয়েকজন সম্মেলনে যোগ দেন। দুই দিনের সম্মেলনে যোগ দেওয়া প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের
মৈত্রী দাস; পাকিস্তানের মালিহা হোসেন ও মোহাম্মদ ওয়াসিম; ভারতের রঞ্জনা
কুমারী, নিরঞ্জন সাগুরটি ও রাভি বার্মা; ভুটানের পিনটোশো; নেপালের রেনু
রাজভান্ডারি ও স্বপ্না প্রধান মাল্লা; শ্রীলঙ্কার অনুশাহ ও কামানি
জিনাদাসা; মালদ্বীপের আয়েশা রিজনা ও আনিসা আহমেদ; জর্জ ওয়াশিংটন
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরি এলেসবার্গ; আয়ারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটা
ডাব্বুরি; ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জে জি সিলভারম্যান; অভিনেতা
রাহুল বোস প্রমুখ।
Source: Dainik Prothom alo